খেজুর খাওয়ার উপকারিতা বা অপকারিতা - খেজুর খাওয়ার ফলে কী হয়।
পোস্ট সূচিপএঃ খেজুর খাওয়ার উপকারিতা বা সুফল - খেজুর খাওয়ার ফলে কী হয়
- খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
- খেজুর খাওয়ার অপকারিতা
- সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে কি হয়
- প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
- রাতে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
- খেজুরের পুষ্টিগুণ
- প্রতিদিন কয়টি খেজুর খাওয়া প্রয়োজন
খেজুর খাওয়ার উপকারিত
খেজুর হচ্ছে একটি শুকনো ফল। এটি হচ্ছে অত্যন্ত ক্যালরিযুক্ত একটি খাবার, যেটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি শরীরের ক্ষয়জনিত সমস্যার সমাধানে অবদান রাখে। খেজুর খাওয়ার ফলে ক্যান্সারের মত বড় রোগের ঝুঁকি কমানো যায়। কখনো কখনো যদি শরীরে দুর্বলতা অনুভব হয় তখন খেজুর খেলে সে দুর্বলতা প্রতিরোধ করা যায়। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল , খনিজ ও আঁশ , যেগুলো শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেক সময় দেখা যায় যে খাবারের অরুচি বোধ হয় । এ সমস্যার সমাধানে খেজুর অত্যন্ত কার্যকরী। রাতের বেলা খেজুর ভিজিয়ে রাখলে পরের দিন সকালে এই খেজুর ভিজিয়ে রাখা পানি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় । পাশাপাশি খেজুর অনেক পরিমাণে ফাইবার পাওয়া যায় যা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ নিরাময় করে । শুষ্ক ত্বক বিশিষ্ট মানুষদের ক্ষেত্রে খেজুরের ভূমিকা অত্যাধিক । খেজুর আমাদের শরীরে বিভিন্ন চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে । খেজুর মুখের লালা কে ভালোভাবে খাবারের সাথে মিশতে সাহায্য করে , যেটি বদহজমকে কমিয়ে দেয় । খেজুরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে এটি খেলে অ্যালজাইমার রোগের ঝুঁকি কমবে । মস্তিষ্ক ঠিক রেখে স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতেও এটি কাজ করে ।
খেজুর খাওয়ার অপকারিতা
খেজুর খাওয়ার ফলে অনেক উপকার পেলেও এটির কিছু অপকারিতা রয়েছে । খেজুর রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয় যেটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ । ডায়াবেটিস মেরিটাজের রোগীদের ক্ষেত্রে খেজুর খাওয়া উচিত নয় । যাদের শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা অধিক তাদের ও খেজুর খাওয়া উচিত নয় । কারণ খেজুরের অধিক পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা শরীরের পটাশিয়ামের মাত্রা অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি করে যার ফলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে । যেমনঃ নোজিয়া ।
সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে কি হয়
খালি পেটে খেজুর খাওয়ার রয়েছে অনেক সুবিধা । সাধারণত খেজুর খাওয়ার ফলে শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর হয় । কোন কারণে দুর্বলতা অনুভব করলে খেজুর তা নিরাময় করতে সাহায্য করে । খালি পেটে খেজুর খেলে শরীরের ক্যালসিয়ামের অভাব দূর হয় । সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে ওজন হ্রাস পায় । পাশাপাশি খেজুরের আয়রন থাকায় রক্তশূন্যতা রোধ করে । কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগ প্রতিরোধ করে এবং ডায়রিয়া জন্য অনেক উপকারী । খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা হাড়কে মজবুত করতে সাহায্য করে । খালি পেটে খেজুর খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায় । খেজুরে রয়েছে অনেক ঘুম যা গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুবই উপকারী । এটি হার্টের সমস্যা দূর করতে দারুন ভাবে কাজ করে । খেজুরের মধ্যেই রয়েছে পটাশিয়াম যা বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় । খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা শরীরে হিমোগ্লোবিন বাড়ায় ও শরীরের রক্ত সরবরাহ করতে সাহায্য করে । খেজুর হচ্ছে আঁশ জাতীয় একটি খাবার যেটিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা মলত্যাগের প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে ও কোষ্ঠকাঠিন্য , বদহজম সমস্যা দূর করে । পাশাপাশি খেজুরে উপস্থিত খনিজ এবং ভিটামিন হাড়কে এতটাই শক্ত করে যে বৃদ্ধসময়ে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগ আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে ।
আরো পড়ুনঃকিভাবে মেসেঞ্জারের একটিভ মুড বন্ধ করা যায়। মেসেঞ্জারের একটিভ স্ট্যাটাস বন্ধের সহজ উপায়।
প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
খেজুর হচ্ছে এমন তো সাহায্যকারী একটি । যেটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী । আমাদের সকলের উচিত প্রতিদিন একটি করে হলেও খেজুর খাওয়া । চিকিৎসকদের মতে দুধের সাথে দুটো খেজুর একসাথে খেলে সেটি সব থেকে কার্যকারী একটি খাবার । যা রক্তে হিমোগ্লোবিন ও প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে । খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম এটি দেহের উচ্চ রক্তচাপ ,কমায় হার্টের সমস্যা দূর করে এছাড়াও শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে । আমাদের সকলেরই উচিত প্রতিদিন খেজুর খাওয়া । কারণ খেজুর অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল হওয়ায় আমাদের শরীরে সকল চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয় ।
রাতে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
রাতের বেলায় অনেকেই দুধ খেয়ে ঘুমাতে চায় । কারণ অনেকের মতে রাতে দুধ খেয়ে ঘুমালে ঘুম ভালো হয় । কিন্তু যদি কুমকুমে গরম দুধের সাথে দুটো খেজুর খাওয়া হয় তাহলে প্রচুর পরিমাণে উপকার পাওয়া যায় । কোলেস্টেরলের রোগীরা রাতে দুটি খেজুর ভিজিয়ে রেখে কিছুদিন টানা সকালে ভিজিয়ে রাখা সেই খেজুর খেলে সেই সব রোগীদের জন্য খুবই উপকারী ওষুধ হিসেবে কাজ করে ।
খেজুরের পুষ্টিগুণ
খেজুর রয়েছে নানাবিদ পুষ্টিগুণ । যেমনঃ ফসফরাস । ম্যাগনেসিয়াম , আইরন, পটাশিয়াম , সোডিয়াম , আঁশ , খনিজ , ভিটামিন , মিনারেল ইত্যাদি । খেজুরে আছে দু গ্রামের মতো প্রোটিন , ৩ শতাংশের মতো ভিটামিন , ৩০০ গ্রাম এর মতো ক্যালারি ও ৭ গ্রামের মত ফাইবার । খেজুরের এই পুষ্টি গুণগুলো আমাদের শরীরের নানা রোগ প্রতিরোধ , ক্ষয় পূরণ ও বৃদ্ধি সাধন করতে সাহায্য করে । এটি শরীরের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে । এইসব মিলিয়ে খেজুর রয়েছে সমস্ত খাদ্যগুণ । খেজুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের যে সমস্ত জায়গায় চাহিদার ঘাটতি দেখা দেয় সেই ঘাটতি পূরণ করতেও এটি বিশেষ ভূমিকা রাখে । আবার খেজুর গ্লুকোজের অভাব দূর করতে সাহায্য করে । খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কার্যকরী । এটি শক্তির একটি বড় উৎস যেটা খাওয়ার সাথে সাথে শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর হয় ও শক্তি বৃদ্ধি পায় । খেজুর পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ ও প্রাকৃতিক আসে পরিপূর্ণ যা পেটের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং নিয়মিত খেজুর খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমে যায় ।
প্রতিদিন কয়টি খেজুর খাওয়া প্রয়োজন
একজন ব্যক্তি প্রতিদিন কয়টি খেজুর খেতে পারবে তা নির্ভর করে তার শারীরিক অবস্থার উপর । শরীরে ক্লান্তি হলে শক্তি যোগান দিতে পারে খেজুর । নিয়মিত খেজুর খেলে প্রতিদিনের কর্ম ব্যবস্থা ক্লান্তি ভাব দূর হয় । সাধারণত একজন সুস্থ সবল ব্যক্তি প্রতিদিন ২ থেকে ৩ খেজুর খেতে পারেন । কিন্তু যে সকল ব্যক্তি অধিক পরিশ্রমে এবং যারা ব্যায়াম করে তারা পরিশ্রম শেষে ৪-৫ খেজুর খেতে পারেন । যারা সাধারণত শরীরে ওজন বাড়তে চায় তারা দুধের সঙ্গে কয়েকটি খেজুর মিশিয়ে খেতে পারেন এতে উপকার পাওয়া যায় । কিন্তু যারা ডায়াবেটিসের রোগী আছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া খেজুর গ্রহণ করতে পারবে না কারণ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খেজুর খেলে এর অপকারিতা সৃষ্টি হয়। প্রতিদিন খেজুর খেলে এতে আমাদের মাংসপেশিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে । যারা ত্বককে সুন্দর ও ভালো রাখতে চান তারা নিয়মিত খেজুর খেতে পারেন ।
শেষ কথা
এই সম্পূর্ণ পোস্টটির মাধ্যমে আমরা খেজুরে পুষ্টিগুণ , উপকারিতা , অপকারিতা এবং নানা বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছি । খেজুর খাওয়ার ফলে কি হয় এই বিষয়েও পরিচিত লাভ করেছি ।খেজুর যেমন আমাদের শরীরে উপকারী খাদ্য হিসেবে কাজ করে তেমনি কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে তবে ক্ষতির দিক থেকে এর উপকারিতার দিকটি বেশি ।
এতক্ষণ আমার সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ । এরকম আরো প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে আমার পাশেই থাকুন যাতে আরো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট বা তথ্য দিয়ে আমি আপনাদের সাহায্য করতে পারি ।
মিম ব্লগার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url