চিয়া সিড খেলে কি হয় -চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক নিয়ম
চিয়া সিড হচ্ছে এক ধরনের বীজ । এটি যেকোনো আবহাওয়ায় জন্মায় । চিয়া বীজ মূলত সাদা এবং কালো দানার মত হয়ে থাকে । এছাড়াও এই বীজে পোকামাকড়েরর আক্রমণও তেমন হয় না। আজকের এই পোস্টটির মাধ্যমে আমরা জানবো চিয়া সিড খেলে কি হয়-চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক নিয়ম এবং চিয়া সিড নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো ।
সাধারণত চিয়া সিড তিলের মত হয়ে থাকে ।অনেকে তোকমা এবং চিয়া সিডকে একই রকম মনে করে কিন্তু চিয়া সিড বা বীজ তোকমার চেয়েও ছোট আকারের হয়ে থাকে ।চিয়া সিডে রয়েছে ফ্যাটি এসিড , পটাশিয়াম , ম্যাগনেসিয়াম , দ্রবণীয় ও অধ্রবণীয় ফাইবার ইত্যাদি । এটি প্রাচীন যুগ থেকে ব্যবহার হয়ে আসছে যা এখন বর্তমান বিশ্বের মানুষ অনুসরণ করে ।
পোস্ট সূচিপএঃ
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
চিয়া সিড খেলে কি হয় চলুন যেনে নেই । চিয়া সিডে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের কার্ড়যকারিতা ও হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এটাতে ফাইবার থাকায় করোনারির হৃদরোগ , ডায়াবেটিস এবং বিভিন্ন ধরনের ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় এবং অম্লের স্বাস্থ্য কেও ভালো রাখে ।চিয়া সিড স্বাস্থ্যকর হজমের সহায়তা করে । এটি নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় । চিয়া সিড বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ । চিয়া বীজে নয়টি অপরিহার্য অ্যামিনো এসিড থাকে এবং প্রোটিন রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে । চিয়া বীজ প্রচুর পরিমাণে পানি শোষণ করে এবং পেটকে পরিপূর্ণ করে তুলে । ফলে কম ক্যালরি খাওয়া হয়। ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকায় এটি হাড় কে শক্তিশালী করে। এছাড়াও রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে চিয়া সিড ।
চিয়া সিড খেলে কি হয়ঃ
- এটি শক্তি এবং কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- ওজন কমাতে সাহায্য করে
- প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে
- ব্লাড সুগার কমায় ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার সুযোগ কমে থাকে
- শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়
- হাড় মজবুত রাখে
- কোলন ক্যান্সার হতে রোধ করে
- মলাশয় পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে
- পেটের গ্যাসের সমস্যা দূর করে
- ত্বক ,চুল ও নখ সুন্দর রাখে
- আয়রনের অভাব কমায়
- সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
- রক্ত ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়
- পচনতন্ত্রের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে
- ক্লান্তি দূর করে
- শারীরিক দুর্বলতা সচল করে
চিয়া সিডের নানাবিধ সুবিধা থাকার ফলে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে সুস্থ এবং সবল রাখতে চেষ্টা করে । চিয়া বীজ খাওয়ার পাশাপাশি এটি মুখেও ব্যবহার করা যায় । কারন এটি মুখে ব্যবহার করলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় । বিভিন্ন দাগ এমনকি বৃদ্ধ ছাপ কমাতেও সাহায্য করে।
চিয়া সিড এর অপকারিতা
চিয়া সিডের ক্ষতিকর দিক থেকে এর উপকারিতার দিকটি বেশি পরিলক্ষিত । প্রতিটি খাবারের সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে । একই ভাবে চিয়া বীজেরও কিছু অসুবিধা রয়েছে । কিছু বিজ্ঞানীদের পরীক্ষায় দেখা গেছে চিয়া বীজ প্রোস্টেড এবং স্তন ক্যান্সার বাড়াতে পারে। তাই এটি সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। খুব বেশি চিয়া বীজ খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে কারণ চিয়া বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে ।তাই এটি স্বল্প পরিমাণে খেতে হবে। যদি কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা অনুভব করেন তবে আপনি অবিলম্বে এটি খাওয়া বন্ধ করুন । বেশি খেলে অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস হতে পারে ।চিয়া সিড শরীরে রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও রক্তচাপ কমায় । সুতরাং অত্যাধিক ব্যবহার করলে রক্তচাপ বেশি কমাতে পারে ।
চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক নিয়ম
সাধারণত যে কোন ফলের জুসের সাথে পান করা যায় । কেউ চাইলে এটি শুধু পানির সাথেও পান করতে পারে । এছাড়া বিভিন্ন সালাত এর সাথে মিশিয়েও খাওয়া যায় ।যেহেতু চিয়া সিড এর নিরপেক্ষ স্বাদ কিন্তু গন্ধ নেই তাইএটি যে কোনো খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার উপযুক্ত। যেমনঃ সুপ ,স্মুদি , কাস্টার্ড ।তবে খাওয়ার আগে ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেলে উপকার পেতে পারেন । বিশেষজ্ঞদের মতে এক গ্লাস পানিতে দুই চামচ চিয়া বীজ এবং দুই চামচ লেবুর রস মিশিয়ে সকালে এবং সন্ধ্যায় ঘুমানোর আগে খেলে ভালো ফল পাওয়া যায় ।
এছাড়াও এক গ্লাস দুধের মধ্যে ২ থেকে ৩ চামচ এর মতো চিয়া সিড নিয়ে ১৫ মিনিটের মতো ভিজালে কিছুক্ষণ পরে এটি জেলের মত হয় চাইলে সেটিও খাওয়া যায় কিংবা ফলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন ।পাশাপাশি চিয়া সিড এর গুন কে দ্বিগুণ করতে চাইলে যে কোন সময় খাবারের মধ্যে একটি দই নিয়ে সেই দই এর মধ্যে ভিজিয়ে রাখা চিয়া সিড দিয়ে খেতে পারলে । এর স্বাদ ও গুনো বৃদ্ধি পায় ।আবার চাইলে বাদাম , খেজুর এবং চিয়া সিড কে একত্রে মিশিয়ে লাড্ডু আকারে সেভ দিয়েও খেতে পারেন । বিভিন্ন ধরনের জুস,অম্লেট এবং অন্যান্য ডেজার্ট এর মধ্যে দিয়েও খেতে পারেন এটি । তবে যেভাবে খান না কেন মনে রাখবেন চিয়া সিড খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে খেকে ভিজিয়ে রেখে তারপর খেতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠার পরে কিংবা রাতে ঘুমানোর আধা ঘন্টা আগে খেতে পারেন ।
শেষ কথা
এই পোস্টটির মাধ্যমে আমরা চিয়া সিড খেলে কি হয় -চিয়া সিড খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করেছি পাশাপাশি চিয়া সিড সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এতক্ষণ পর্যন্ত আমার পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ । পরবর্তী পোস্ট পেতে আমার পাশেই থাকুন ।
মিম ব্লগার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url