OrdinaryITPostAd

রসুন খাওয়ার বিশেষ গুণ-সঠিক নিয়ম-কার্যকারিতা

মানবদেহকে কর্মক্ষম রাখতে রসুনের রয়েছে বিশেষ গুণ । রসুন যেমন বিভিন্ন খাবার ও মুখরাচর খাবারে  ব্যবহৃত হয়ে খাবারের স্বাদকে বৃদ্ধি করে তেমন মানুষের শরীরের বিভিন্ন  রোগ প্রতিরোধ  ক্ষমতার বৃদ্ধি করতে রসুন খুবই কার্যকারী একটি উপাদান ।

রসুনের মধ্যে সালফার কাম্পনেন্ট থাকার ফলে এর ঔষধি কার্যকারিতা খুব বেশি  । এর ফলে দেহের বিভিন্ন ক্ষয় পূরণ , বৃদ্ধি সাধন এবং রোগ প্রতিরোধ করতে রসুনের বিশেষ  গুণের ভূমিকা অত্যাধিক । সাধারণত রসুনকে বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায় । অনেকে রান্না করে বিভিন্ন পদ্ধতিতে রসুন খায় আবার অনেকে সুধু  রসুনও খেয়ে থাকে ।

পোস্ট সূচিপত্রঃ


রসুনের উপকারিতা 


মসলা জাতীয় খাবারের মধ্যে রসুন হচ্ছে অন্যতম । রসুনে রয়েছে ফাইবার , প্রোটিন কম্পাউন্ড , সালফার  । এই প্রতিটি উপাদান আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য  খুবই উপকারী । সাধারণত আমাদের  দৈনন্দিন রান্নাবান্নায় রসুনের ব্যবহার করে থাকি । কিন্তু আমরা অনেকেই রসুনের উপকারিতা সম্পর্কে অজানা ।  চলুন আমরা রসুনের উপকারিতা সম্পর্কে অবগত হই । আমরা অনেকেই জানি নিয়মিত রসুন খাওয়া চলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে । কিন্তু এর কারণটা কি সে বিষয়ে  আমাদের অনেকেরই অজানা । নিয়মিত রসুন খেলে শরীরে  নাইট্রিক অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায় , যার ফলে শরীরে রক্তে ধমনী গুলো বৃদ্ধি পেতে থাকে। যখন  রক্তের ধমনীগুলো বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন রক্তের ধমনীর গায়ে ব্লাডের প্রেসার কমে যায় ।

যাদের সর্দি-কাশির পরিমান বেশি তারা নিয়মিত ২ কুয়া রসুন খেলে সর্দি কাশি ও ঠান্ডা লাগা কমতে পারে  ।  সাধারণত যাদের ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেশি তারা অবশ্যই রসুন খেয়ে দেখতে পারেন । গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতিদিন ২ কুয়া কাঁচা রসুন খেলে হাই ব্লাড প্রেসার , হাই কোয়ালিস্টোরোল , হৃদরোগের সম্ভাবনা  ও অস্থি  ভঙ্গড়তা ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা কমাতে সাহায্য করে । আবার যারা অধিক পরিশ্রম করে তাদের কাজ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় রসুন ।


পরিশ্রম ব্যক্তিদের জন্য  রসুন খুবই কার্যকারী একটি উপাদান । রসুনে সালফার কম্পনেন্ট থাকার কারণে এর উপকারিতা অনেক গুণ বেশি । সাধারণত অনেকের নিউরজিক্যাল সমস্যা থাকে । যেমনঃ ডাইমেনশিয়া , এলজাইমার এই ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে । ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রসুন একটি উপকারী খাদ্য । আবার হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে ও সেল  ড্যামেজ  রোধ করতে রসুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । রসুনের মধ্যে থাকে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট  মানসিক চাপ  রোধ করতে সাহায্য করে ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল থাকার ফলে মাড়ির সমস্যা সারাতে  খুবই কার্যকরী । রসুন আমাদের শরীরে বিভিন্ন কোষের ক্ষয়রোধ করতেও সাহায্য করে ।

সকালে খালি পেটে রসুন খাওয়ার উপকারিতা


সকালে খালি পেটে রসুন খাওয়ার কিছু উপকারিতা প্রদর্শন করা হলোঃ
  1. খালি পেটে প্রতিদিন সকালে দুই কোয়া রসুন খেলে শরীরের রক্তের সঞ্চালন ক্ষমতা বেড়ে যায় ।
  2. প্রতিদিন সকালে খালি পেটে রসুন খেলে পুরুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে ।
  3. সকালে খালি পেটে রসুন খেলে হৃদপিণ্ড শক্তিশালী । হবে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যাবে এর ফলের হৃদপিন্ডের ব্লগগুলো  আর বাড়বে না ।
  4. প্রতিদিন সকালে  দুই  কুয়া রসুন খালি পেটে খেলে শরীরের রক্তচাপ জনিত সমস্যা সমাধান হবে ।
  5. প্রতিদিন দুই  কুয়া রসুন খালি পেটে খেলে ত্বকের বার্ধক্যের ছাপ পড়বে না , চেহারার দাগ কমে যাবে ও ত্বক  ভালো থাকবে ।

কোন ব্যক্তির জন্য রসুন খাওয়া উচিত নয়


রসুন আমাদের শরীরের ক্ষেত্রে উপকারী ভূমিকা পালন করলেও কিছু সংখ্যক ব্যক্তির জন্য রসুন ক্ষতিকর হয়ে থাকে ।সাধারণত যাদের রসুন খেলে এলার্জি সমস্যা হয় তাদের এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে ।  অনেকের গ্যাস্ট্রিক  ,  আলসার  থাকে তাদের রসুন খাওয়া উচিত না । সাধারণত গ্যাস্ট্রিক আক্রান্ত রোগীদের জন্য রসুন খাওয়া একদমই উচিত নয় কারণ  অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে পেটের ভিতরে গ্যাস্ট্রিকের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে ও বুকে জ্বালাপোড়া শুরু হয় এমনকি বুকে যন্ত্রণাও হতে পারে তাই এসব ব্যক্তিদের জন্য রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে । যাদের ডায়রিয়া ও  বমিটিং সমস্যা রয়েছে তাদেরও রসুন খাওয়া উচিত নয় কারণ রসুন এ  আছে ঝাঁজ ও গরম ভাব যা ডায়রিয়া এবং ভূমির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে ।

যাদের ক্ষতস্থানে রক্তপাত বন্ধ হয় না তাদেরও রসুন খাওয়া উচিত নয় কারণ রসুন রক্তকে জমাট বাঁধাতে বাধা সৃষ্টি করে এর ফলে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না । এইসব সমস্যাকগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য রসুন পরিহার করতে হবে । অতিরিক্ত রসুন খাওয়ার ফলে পেটে অসুস্থ সৃষ্টি হলে তখনই রসুন খাওয়া বন্ধ করতে হবে । 

রসুন খাওয়ার সঠিক নিয়ম


আমাদের মধ্যে অনেক ব্যক্তি আছে যারা তাদের দৈনন্দিন রান্নাবান্নাতে রসুনের ব্যবহার করে থাকি । কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যদি আমরা রান্নার মাধ্যমে প্রতিদিন রসুন খেয়ে থাকি তাহলে রসুনের পুষ্টি গুন গুলো ওই রান্নার মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায় । রসুনের অধিকাংশ গুণগুলি রান্না করার ফলে নষ্ট হয়ে যায় । তাই আমাদের সকলের উচিত প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন খাওয়া । মূলত সকালে রসুন চিবিয়ে খেলে এর পুষ্টিগুণ অনেকটাই বৃদ্ধি পায় এবং এতে  রসুনের যে গুনগুলো থাকে সেই সব গুণ যথাযথভাবে কাজ করে থাকে । আমাদের মধ্যে অনেকেই রসুনের আচার খেয়ে থাকি । কিন্তু আমরা জানি না এটি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কারণ রসুনের আচারে অধিক পরিমাণে লবণ ব্যবহার করা হয় যা আমাদের স্বস্থের জন্য খুবই খারাপ প্রভাব ফেলে ।তাই আমাদের সকলের উচিত রসুনের আচার কিংবা রান্নাতে রসুন ব্যবহার করা ছাড়াও প্রতিদিন সকালে কিংবা খাবারের মধ্যে কাঁচা রসুন খাওয়া । কারণ কাঁচা রসুনে এর সকল গুনাগুন বিদ্যমান থাকে কিন্তু অন্য উপায়ে খেলে রসুনের সকল পুষ্টিগুণ গুলো নষ্ট হয়ে যায় ।

রসুনের কিছু বিশেষ গুণ


ইতিমধ্যে আমরা রসুনের বিভিন্ন কার্যকারিতা সম্পর্কে জেনেছি ।  এখন রসুন খাওয়ার বিশেষ গুণ সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য জানবো  । আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা যে রসুন খাওয়ার ফলে আমাদের যে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে মুখে সেই ছাপকে নিরাময় করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে । পাশাপাশি যদি মুখে  ব্রন হয় সেই ব্রণ দ্রুত শুকাতে ও সাহায্য করে । আবার হাড় মজবুত করার মতো  বিশেষ কার্যক্ষমতাটিও সম্পন্ন করতে সাহায্য করে এবং বাতের সমস্যা ও দূর করতে সাহায্য করে ।

ছবি


ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে রসুনের উপকারিতা


রসুন খাওয়ার বিশেষ গুণের মধ্যে ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে রসুনের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো । সাধারণত ক্যান্সারের মত বড় বড় রোগ প্রতিরোধ করতে রসুন গুরুত্বপূর্ণ কোন ভূমিকা পালন করে । যেমনঃ কোলন ক্যান্সার  প্রতিরোধে, গলব্লাডার ক্যান্সার হতে মুক্তি লাভে এটি বিশেষ কাজ করে । রসুন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় । আবার রেক্টাল ক্যান্সারে হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং প্রোটেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে । সুতরাং ক্যান্সারের মতো বড় রোগ কে প্রতিরোধ করতে এটি বিশেষ  ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে ।


চুল পড়ার ক্ষেত্রে রসুনের কার্যকারিতা


চুল পড়া রোধে রসুন ম্যাজিকের মত কাজ করে থাকে । এটি শুধু চুল পড়া কমায় না পাশাপাশি মাথার ত্বকের ইনফেকশন ও মাথার খুশকি দূর করতেও সাহায্য করে । শুধু তাই না রসুন নতুন চুল গজাতেও বিশেষ কার্যকারিতা গ্রহণ করে থাকে । অনেক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে রসুন বেটে যেই রস পাওয়া যায় সেই রস যদি  খালি মাথায় ব্যবহার করা হয় তাহলে নতুন চুল উৎপন্ন হয় । রসুনের রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এলিসিন যারা রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে । তাই যাদের চুল পড়ার ক্ষেত্রে  হতাশাচ্ছন্ন তারা রসুন ব্যবহার করতে পারে ।

কোন ধরনের রসুন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর


ইতিমধ্যে আমরা রসুনের বিভিন্ন উপকারিতা- রসুন খাওয়ার বিশেষ গুণ -কার্যকারিতা ও সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি । কিন্তু রসুনের ভিতরেও রয়েছে নানা প্রকারভেদ । রসুন খাওয়ার ক্ষেত্রে কোন রসুন আমাদের শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং কোন রসুন আমাদের শরীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে সে সম্পর্কে জানব । সাধারণত আমাদের মধ্যে অনেকেই চাইনিজ রসুন বা বড় কোয়া বিশিষ্ট রসুন খেয়ে থাকে এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখেনা । কারণ এই বড় কুয়াবিশিষ্ট্য রসুনে পর্যাপ্ত গুণাগুণ বিদ্যমান থাকে না যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখবে । অনেক সময় বিভিন্ন ক্ষতিকারক পদার্থ ব্যবহারের মাধ্যমে রসুনকে বড় করে থাকে এগুলো মূলত আমাদের শরীরের উপকারের বদলে  ক্ষতি করে থাকে । তাই আমরা এই সমস্ত রসুন থেকে দূরে থাকবো ।

 আর যে সমস্ত রসুনের আকার ছোট এবং দেশি রসুন চেষ্টা করব সে সমস্ত রসুন আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখতে । কারণ এই সমস্ত ছোট রসুন এবং দেশি চাষ করার রসুনের পর্যাপ্ত পরিমাণে গুনাগুন থাকে যেটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগের  নিরাময়ে ভূমিকা রাখে ।


শেষ কথা

আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা রসুন খাবার বিশেষ গুণ-সঠিক নিয়ম ও কার্যকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত  জেনেছি । পাশাপাশি রসুন সম্পর্কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করেছি । আশা করি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে অনেকেই উপকৃত হবেন । এমন আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে সবাই আমার পাশে  থাকবেন । এতক্ষণ  আমার সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মিম ব্লগার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪